বর্তমান বিশ্বে পরিবেশগত সমস্যা একটি মারাত্মক সমস্যা। একটু লক্ষ্য করলেই
আমরা দেখতে পাই, নিজেদের অবহেলার কারনেই প্রতিদিন আমরা চারপাশে তৈরি করছি বিষাক্ত
পরিমন্ডল এবং নিজেদের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ঠেলে দিচ্ছি এক নি:শব্দ বিষক্রিয়ার
মধ্যে। ফলে পরিবেশের মারাত্মক অবনতি ঘটছে, যা আমাদের জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ।
পরিবেশ দূষণের এই মরণ ছোবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বৃক্ষ অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। মানব সভ্যতার ধারাবাহিক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে
দেখা যায় নিবিড় বৃক্ষ শোভিত অরণ্যের শ্যাম-স্নিগ্ধ
সৌন্দর্যের পটভূমিতেই উন্মেষ ঘটেছিল মানুষের আদিম সভ্যতার। আদিম যুগে মানুষ ছিল সম্পূর্ণরূপে প্রকৃতি
নির্ভর। মানুষের সার্বিক চাহিদা পূরণের একমাত্র উৎস
ছিল প্রকৃতির সুপরিসর অঙ্গণ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ রক্ষায়ও বৃক্ষের অবদান অনেক বেশি। আমাদের দেশে উপকূলীয় দূর্যোগ বৃদ্ধি পেয়েছে উপকূলীয় সবুজ
বেষ্টনীহীনতার কারণে। বাংলাদেশের সুন্দরবন ও বান্দরবান দুর্যোগের বিরুদ্ধে
অতন্ত্র প্রহরী হয়ে দাড়িয়ে আছে। সামুদ্রিক জলোচ্ছাস, ভূমিক্ষয় রোধ করার জন্য
উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরী।
আমাদের দেশের অনেক মানুষেরই জমি-জমা, ঘরবাড়ী নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
নদীগুলোর চারপাশে যদি সবুজ বেষ্টনী দ্বারা ঘিরে রাখা যায় সেই ক্ষেত্রে যেমন
ভূমিক্ষয় রোধ করা যাবে, তেমনই নদ-নদীর পাড়গুলোও মানুষের ব্যবহার উপযোগী হবে, অনেক
নান্দনিক হবে। আর সেই সমস্ত জায়গায় মানুষ প্রাকৃতিক শোভাকে আরো ভালভাবে উপভোগ করতে
পারবে। এই বৃক্ষরোপণ শুধু নান্দনীক অর্থেই নয়,
ঘূর্ণীঝড়, জলোচ্ছাস, হ্যারিকেনসহ অনেক প্রাকৃতিক দূর্যোগের বিষাক্ত মরণ ছোবলের বিরুদ্ধেও
দাড়াবে। মানুষের আশ্রয়কে
আরও নিরাপদ করবে।
বৃক্ষের গুণাগুণ বলে শেষ করা যাবে না। আমি শুধু আমাদের দেশের নদী-নালা,
খাল-বিলের পাশে বৃক্ষ রোপণের সুবিধা বোঝার জন্যে ছোট্ট একটি চিত্র আপনাদের মাঝে
তুলে ধরছি। আমাদের দেশের সরকার ও জনগণের একটু সদিচ্ছাই যথেষ্ট এই সমস্ত কাজ করার
জন্যে। বর্তমান সরকার পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকার হাতিরঝিল প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।
ইহা আমাদের দেশের জন্যে অনেক বড় একটা পাওয়া। সুস্থ একটি পরিবেশতো আমরা পেয়েছিই,
সেই সাথে ঢাকা শহরের চেহারাই পাল্টে দিয়েছে হাতিরঝিল।
সারা বাংলাদেশের সমস্ত নদ-নদীগুলোকে যদি শুধুমাত্র বৃক্ষ রোপণের মাধ্যমেও
উন্নতি সাধন করা যায়, তাহলেও আমাদের দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অনেকগুণ বৃদ্ধি পাবে
এবং প্রাকৃতিক দূর্যোগের হাত থেকেও আমাদের দেশ অনেকাংশে রক্ষা পাবে। কেননা, একটি
দেশে শতকরা ২৫% বণায়ন থাকা বাঞ্চনীয়, যেখানে
আমাদের দেশে মাত্র ১৬% বর্তমান।
Please read this ................
ReplyDelete